আমার তোমার তোমাদের গল্প পার্ট ১
"সাদা বিছানাটাতে অনেকটা জায়গা জুড়ে লাল রক্তের ফোটা ফোটা দাগ রয়েছে"
আর পিরিয়ডের অসহ্য যন্ত্রণা।তার উপর তার স্বামীর ছোয়া৷ এ যেন মরন যন্ত্রণা মতো। কিন্তু তবুও অনিমার মুখে ফুটে আছে এক চিলতে হাঁসি। এ যেন সুখের হাঁসি। না পাওয়া ভালোবাসার হাঁসি।এত দিনের না পাওয়া ভালোবাসা পেয়েছে সে যেন আজ। যেন এতদিন সে এই দিনের অপেক্ষায় ছিল। এক সময় তার স্বামী ক্লান্ত হয়ে পাশে শুয়ে পড়ে। অনিমা তার দিকে তাকাতে দেখে সে এই টুকু সময়ের ভিতর গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে গেছে। অনিমা একটা মন ভুলানো একটা হাঁসি দেয়।এই হাঁসিতে রয়েছে অযশ্রো ভালোবাসা। না পাওয়া হাজার ও ভালোবাসার আশা।অনিমা যেন সে আজ সব থেকে খুশি। এখন তাকে দেখলে মনে হবে না তার পিরিয়ডের সময় চলছে। তার সব ব্যাথা- যন্ত্রণা যেন নিমিষেই হারিয়ে গেছে।
.
.
.
শুভ সাথে অনিমার বিয়ের দুই বছর হলো। কিন্তু দুজনের মধ্যে কেউ স্বামী স্ত্রীর মর্যদা পাই নি। পাবে বা কিভাবে শুভ যে অনিমাকে মেনে নিতে পারে নি। পারে নি তাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে।
.
.
.
🌿🍁
নোয়াখালী হাজি পাড়া গ্রামের মেয়ে অনিমা। পৃথিবীতে আপন বলতে মা এবং ছোট বোন আছে। বাবা মারা গেছেন আরো দুই বছর আগে। তাদের অভাবের সংসার। অনেক কষ্টে দিন কাঁটে তাদের। অনিমার বয়স ১৭ আর তার ছোট বোনের বয়স ১২। অনিমা এবার এস এস সি পরিক্ষা দিয়েছে । অভাবের কারনে তার আর পড়া হয়ে উঠে নি।
.
.
.
শুভের বাবা তার বন্ধুর কথা রাখতে অনিমার সাথে তার ছেলের বিয়ে দেয়। বিয়ের দিন রাএে
আমি এ বিয়ে মানি না।
দেখো শুভ বাবা যদি জানতে পারে তাহলে কি হবে।
বাবা জানতে পারলে কি হবে শুনি। কেন ভাবি আমার জিবনটা এভাবে নষ্ট করে দিল বাবা।
দেখ ওনি তোমার বাবা যা করেন সেটা তোমার ভালোর জন্য করেন। তাই বলছি কি যাও রুমে যাও অনিমা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
না আমি যাবো না ওই গাইয়া মেয়ের কাছে। আমার একটা সুন্দর জিবন আছে ।আমার নিজের পছন্দ আছে। বন্ধুদের সাথে চ্যালেন্স করে ছিলাম তাদের থেকে শতগুন ভালো মেয়ে বিয়ে করবো। কিন্তু দেখো বাবা একটা গাইয়া মেয়েকে বিয়ে করিয়ে দিলো। এখন আমি বন্ধুদের কাছে কি বলবো। তারা আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করবে।
দেখ শুভ আমি ও যখন তোমার ভাইয়াকে বিয়ে করেছিলাম তখন এরকম অনেক কথা শুনেছি এবং তোমার ভাইয়া ও শুনেছে তার বন্ধুদের কাছ থেকে। তাই বলে কি আমরা স্বামী স্ত্রী না। সংসার করবো আমরা বাহিরে লোকে কে কি বললো তাতে আমাদের কান দিতে নেই। দিলে যে আমাদের সংসারের পাটল ধরবে।আর দেখো অনিমা তোমার জীবন সঙ্গী হিসাবে একবারে পারফেক্ট। সে তোমাকে সুন্দর করে বাঁচতে শিখাবে।আমার বিশ্বাস সে পারবে আমাদের সংসার কে টিকিয়ে রাখতে। তার ভিতরে আমি অনেক কিছু দেখেছি। তাই বলছি কি তুমি যাও রুমে মেয়েটা সে কখন থেকে অপেক্ষা করছে।
করলে করুক আমি আজকে সে রুমে যাবো না।
একদম ঠিক বলেছিস তোর ওই গাইয়া মেয়ে কাছে যাওয়ার দরকার নেই। হঠাৎ পিছন থেকে শুভর মা কথাটা বলে উঠে...
মা আপনি এসব কি বলছেন ও সবে মাএ বিয়ে করেছে, সে বৌয়ের কাছে যাবে না তো কোথায় যাবে।
সে তোমাদের রুমে ঘুমাবে। আর তুমি ওর রুমে ওই মেয়ের সাথে ঘুমাবে।
কিন্তু মা
আমি আর কোন কথা শুনতে চাই অরনি। গাইয়া মেয়ে একটা। না আছে টাকা,পয়সা,না আছে সৌন্দর্য।
দেখুন মা টাকা,পয়সা আর রুপ দিয়ে সব হয় না। সংসার করবে তারা দুজন তাতে আপনার সমস্যা কোথায়। আর সংসার করতে হলে সুন্দর একটা মন লাগে যা ওই অনিমার ভিতরে আছে।
দেখ আদনান তোর বৌ আজ আমার মুখের উপর কথা বলছে??
মা অরনি তো ঠিকই বলছে। সংসার করবে শুভ আর অনিমা। তাহলে আমরা সে খানে কাবাব মে হাড্ডি হবো কেন?
আমি এ বিয়ে মানি না।
তুমি না মানলে কিছু হবে না। সংসার তুমি করবে না, তারা করবে। আর আমি আমার ছেলের জন্য পারফেক্ট বউ এনেছি।
কারো কোন কথা নেই সবাই চুপ...
এতক্ষন থেকে তোমাদের অনেক কথা শুনেছি। যা হয়েচে এখানেই শেষ। দ্বিতীয় বার এসব নিয়ে কথা হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। শুভ তারাতারি রুমে যা। তোকে যেন আবার দ্বিতীয় বার বলতে না হয়।
ঠিক আছে বাবা আমি যাচ্ছি।
অরিন তুমি ওকে ওর রুমে দিয়ে আসো।
ঠিক আছে বাবা, আমি শুভকে দিয়ে আসচি। আপনি রুমে গিয়ে রেষ্ট নিন। এই শুভ চল।
হাঁটতে হাঁটতে দেখছো তোমাকে আগে বলছি রুমে যাওয়ার জন্য ।গেলে তো আর এত কথা শুনতে হতো না।
কিছু না বলে রুমে ডুকে পড়লাম। দরজাটা আটকিয়ে দিয়ে সোফায় গিয়ে বসলাম।সামনে তাকিয়ে দেখি আমার সর্ধ্য বিয়ে করা বউ ইয়া বড় গোমটা দিয়ে বসে আসে।
এই আপনি আপনার গোমটাটা সরান।
আআআমি
তা নয়তো কি আমি। আপনি যদি মনে করে থাকেন আপনি ইহা বড় গোমটা দিয়ে বসে থাকবেন আর আমি গিয়ে সেটা তুলবো। তা হলে আপনি ভুল। আমি আপনাকে কখনো মেনে নিতে পারবো না। আর আমার কাছে কখনো স্বামীর অধিকার চাইতে আসবেন না। আমি আপনাকে বিয়ে করেছি,তবে সেটা আমার ইচ্ছাতে নয়, হয়ছে বাবার ইচ্ছাতে। তাই যেহেতু এই বিয়েতে আমার ইচ্ছাতে হয়নি, হয়ছে আমার ইচ্ছার বিরুদ্বে তাই আমার কাছ থেকে কখনো Husband type attitude আশা করবেন না। তাই বলছি ঘুমটা তুলুন (ধমক দিয়ে)
ধমক শুনে অনিমা কাপা কাপা হাতে ঘোমটা তুলে। শুভ তার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার চোখ নামিয়ে নেই। অনিমার চোখ গুলো অসম্ভব ফুলে আছে। মনে হচ্ছে এতক্ষন কেঁদেছে। কাদলে আমার কি? আমি আমার মতো থাকবো।
এই আপনি বিছানা থেকে নামেন আমি ঘুমাবো।
চুপ...
কি হলো বিছানা থেকে নামছেন না কেন? (ধমক)
অনিমা বিছানা থেকে নেমে পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
কি হলো আপনি দাঁড়িয়ে আছেন যে যান ঘুমান।
আআআমি কোকোথায় ঘুমাবো।
এই নিন বালিশ আর এই নিন চাদর ফ্লোরের এক কোনায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।
অনিমা কাপা কাপা হাতে সে গুলো নিয়ে ফ্লোরের এক কোনায় বিছানা করে শুয়ে পড়ে....
#See_more
#আমার_তোমার_আমাদের_গল্প
#পর্বঃ০১
#আবির_মাহমুদ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন