তুমি আসবে বলে পার্ট ১


"মম তোমার মাথা ঠিক আছে, একটা ১৩ বছরের বাচ্চা মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করো কিভাবে?

"আমার পক্ষে এ বিয়ে করা অসম্ভব।


 আর তাছাড়া আমি এখন বিয়ে করতে চাইছি না "আমার লাইফ মাত্র শুরু করেছি, এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। 

বুঝার চেষ্টা করো, আর তাছাড়াও একটা বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করার মতো নিম্ন মানুষিকতা আমার না। 

তোমরা শিক্ষিত সচেতন মানুষ হয়ে এরকম একটা কথা কি করে বলতে পারো? আমার বুঝে আসছে না।

"তোমরা ভাবলে কি করে আমি একটা বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হবো! 

আমার পরিচয়টাই তো দেয়া হয়নি, আমি মেহের আফরোজ মেঘ, বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। এবার অর্নাস সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। 

লন্ডনে থাকি। আমার পুরো ফেমেলি সেখানেই থাকতো। 

দুদিন আগেই তারা বাংলাদেশ এসেছে। কালকে আমাকেও জরুরি তলব দিয়ে নিয়ে এসেছে। বাকি তো আপনারা দেখতেই পারছেন।

 মিসেস মমতা : চৌধুরী (মেঘের মা) বিয়েটা তোমাকে করতেই হবে মেঘ

 মেঘ: পাপা, তুমিতো অন্তত বুঝাও মমকে আমার পক্ষে এই বিয়েটা করা পসিবল নয়। 

 মোর্শেদ আফরোজ : বিয়েটা করে নও মেঘ। 

 পাপা তুমিও একি কথা বলছো; আমি ভেবেছিলাম তুমি অন্তত বুঝবে। 

 

" তোমাদের যা ইচ্ছে কর আমি আজ এখনই চলে যাবো।


"মেঘ তোমার মনে আছে! তুমি বলছিলে আমি যা চাইবো তুমি তাই দিবে। তবে আজ কেনো পিছু হটে যাচ্ছো। 

মেঘ এই মেয়েটি কে আমার চাই, এট এনি কস্ট  

  কথাটা বলে সামনে পা বাড়াতেই মিসেস মমতা চৌধুরী মেঘের হাত ধরে বলে, কোথাও যাওয়া হবে না তোমার। আমার সাথে এসো,বলেই মেঘের হাত ধরে একটা রুমে নিয়ে যায়। 

  মেঘ অবাকের উপর অবাক হচ্ছে। তার মম কোনদিন তার সাথে জোর করেনি। আর আজ তার জীবনের এতো বড় একটা ব্যপারে তার কোনো কথাই শুনছে না। 

 মিসেস মমতা চৌধুরী বললেন, সামনে তাকও মেঘ 

 মেঘ দেখতে পায় একটা বাচ্চা মেয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে।

  নিষ্পাপ চেহারা, যেন গোলাপের কলি। 

  মেঘের আপসোস হলো এই নিষ্পাপ বাচ্চা মেয়েটার সাথে এতো বড় অন্যয় কেনো করছে তার মম?

 আচ্ছা মেয়েটার মা বাবাই বা কেনো রাজি হচ্ছে? 

 

 হঠাৎ তার মম এর কথায় মেঘের ঘোর কাটে

  কি ভাবছো,কেনো এই বাচ্চা মেয়েটার সাথে এতো বড় অন্যায় করা হচ্ছে?? 

 তাহলে দেখো, বলেই মেয়েটির গা থেকে কাঁথা শরিয়ে দেয় 

  

 মেঘ দেখতে পেল, বাচ্চা মেয়েটার শরীরের যতটুকু অংশ দেখা যাচ্ছে, ততটুকু জায়গা নীল বর্ন হয়ে ফুলে আছে। মনে মনে ভাবছে এতোটুকু বাচ্চা মেয়েটাকে কে এভাবে নিষ্ঠুরের মতো মারতে পারলো?

 

 "মেঘ তার মায়ের দিকে জিজ্ঞেসু দৃষ্টিতে তাকায় 

 

মিসেস মমতা চৌধুরী মেঘের দৃষ্টি বুঝতে পেরে

  বলতে থাকে, ভাবছো কোন অমানুষ এই বাচ্চা মেয়েটাকে এভাবে মারলো?

 মেঘ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। 

 মিসেস মমতা চৌধুরী বললেন, তার আগে তুমি কথা দাও এই বিয়ে টা তুমি করবে।

-মম বিয়ে কেনো করতে হবে?

 তুমি ওকে আমাদের সাথে নিয়ে গেলেই তো হয়। 

মিসেস মমতা চৌধুরী : যদি নিয়ে যেতে পারতাম, তবে তোমাকে বিয়ে করতে বলতাম না। 

তোমার কাছে আমি অনুরোধ করছি বিয়েটা করে নাও তুমি। 


মেঘ বুঝতে পারছেনা, একটা বাচ্চা মেয়েকে সে বউ হিসেবে কি ভাবে মেনে নিবে। 

এটা কি ভাবে সম্ভব ২৩ বছরের একটা যুবক কিনা ১৩ বছরের একটা বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করবে? 

" না! মেঘ কিছুতেই পারবে না এই বিয়ে টা করতে 

দরকার পড়লে, পুলিশের সাহায্য নিয়ে মেয়েটাকে এখান থেকে নিয়ে যাবে।

" তবুও বিয়ে করা তার পক্ষে অসম্ভব। 

 

হ্যাঁ এটা ঠিক মেঘের জীবনে এখনো কোনো মেয়েকে বিশেষ ভালো লাগেনি।তবে সামিরাকে মেঘ কি উত্তর দেবে। খুব তো বড় মুখ করে বলেছিল সট্যাডি শেষ না হওয়া অব্দি এসবে জড়াবে না। আর এখন ডিরেক্ট বিয়ে। 

মেঘ ভাবছে কি ভাবে এসব থেকে বের হওয়া যায়। 


আবার মনে মনে ভাবছে, বিয়ে করবো ঠিক আছে। তাই বলে একটা বাচ্চা মেয়েকে? 

কেনো যে বাবা, আর মমকে বাংলাদেশ আসতে দিলাম।এখন লও ঠেলা। 


মিসেস মমতা চৌধুরী মেঘের কাঁধে হাত রেখে বলে কি এতো ভাবছিস বল তো। আমি তো বলছি এই বিয়ের ব্যপারটা গোপন রাখবো। তুই না চাইলে কেউ জানবে না। 


- মম সিরিয়াসলি বিয়েটা করতেই হবে? 

- হুম করতেই হবে। ভাবতে পারিস এটা তোর কাছে আমাদের শেষ চাওয়া।


- মেঘ আবকর ভাবনায় পরে গেলো। কি করে বিয়েটা আঠকানে যায়।


 - অতশত না ভেবে বিয়েটা করতে রজী হয়ে যাও। মেঘের হাত দুঠো ধরে বলে, তোমাকে অনুরোধ করছি মেঘ তুমি শুধু বিয়েটা করে মেয়েটাকে আমার করে দাও। 

তোমার ওর কোনো দায়িত্ব নিতে হবে না। 

তুমি তোমার মতো পড়াশোনা কন্টিনিউ কোরো বা তুমি তোমার মতো থেকো, তোমাকে কখন ওর দায়িত্ব নিতে হবে না। 

তুমি ওকে বিয়ে করে আমার মেয়ে বানিয়ে দাও। 

ও বড় হওয়ার পরও যদি তোমার মনে হয় তুমি ওর সাথে থাকতে পারবে না, তাহলে আমি নিজে তোমাদের ডিভোর্স করিয়ে দেবো। 

তুমি বিবাহিত সেই বিষয় আমরা ছাড়া অন্য কেউ জানবেনা। 

"তুমি না চাইলে কোনদিন ও জানবেনা 

আমি ওয়াদা করছি তোমাকে। 

"তবুও বিয়েটা করো! 


-মেঘ নিজের মায়ের এমন আকুতি ভরা আবদার কি করে ফিরিয়ে দেবে? আর কি করেইবা এই বাচ্চা মেয়েটাকে বিয়ে করবে?

মেঘ দোটানায় ভুগছে, একদিকে তার মম আর অন্য দিকে তার আত্মমর্যাদা। 

মেঘ বুঝতে পারছে না এখন তার কি করা উচিৎ। 

মেঘ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, মম তুমি যা চাও তাই হবে ।

তুমি কোনদিন আমাকে ফোর্স করতে পারবে না! এই মেয়েটাকে মেনে নিতে। 

"আর একটা কথা, বিয়েটা কেনো করতেই হবে, সেটা যদি বলতে। 

-আমি তোকে সব বলবো মেঘ, আগে বিয়েটা কর 

তোর মায়ের উপর বিশ্বাস রাখ।

 আমি অপারগ না হলে কোনদিন তোকে এই বিয়ে করতে বলতাম না। 


-বিয়েটা কখন করতে হবে। 

মিসেস মমতা চৌধুরী বললেন, তোর বাবা কাজী আর গ্রামের মোরলদের নিয়ে আসছে। 

তোর বাবা ওদের নিয়ে আসলেই বিয়ে

 -মম আমি কিন্তু বিয়েটা শুধু তোমার জন্য করছি। 

- বারবার এককথা কেনো বলছিস,আমার মনে থাকবে আরহা তোর বউ না আমার মেয়ে। 

মেঘের বাবা হন্তদন্ত হয়ে রুমে ডুকে, মেঘ নিজের বাবাকে পেরেশানিতে দেখে, জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে?

 তোমাকে বিচলিত দেখাচ্ছে কেন

 এনি প্রবলেম? 

মোর্শেদআফরোজ : মেঘকে কিছু না বলে, মিসেস মমতা চৌধুরীর দিকে এগিয়ে গেলেন। মেঘ তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু দেখছে। তার বাবা তার মাকে কিছু বলার ট্রাই করছে। মেগ বুঝতে পারছে কথাটা কোন গুরুত্বপূর্ণ। তবে তাকে বললে সমস্যা কোথায়?  


মেঘ ভাবছে কে এই মেয়ে যার জন্য তার বাবা, মা দুজনেই এতোটা ডেস্পারেট। এই মেয়ের কথা তো আগে কখন শুনিনি মম ড্যাড এর মুখে। কি এমন সম্পর্ক এই মেয়ের সাথে যার জন্য তার বাবা মা, নিজের ছেলের ফিউচারের কথা না ভেবে এই মেয়েটার চিন্তা করছে?আচ্ছা এই মেয়ের বাবা, মা কেথায় এদের দেখছি কেনো? 


কথাটা শুনে ,মমতা চৌধুরী চেহারায় চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। 

কি করে কথাটা মেঘকে বলবে। আর কথাটা শুনে মেঘ কি রিয়েক্ট করবে। আদৌ মানবে তো তাদের কথা। 

এসব ভাবছে আর একবার মেঘের দিকে তাকাচ্ছে তো একবার নিজের হাসব্যান্ডের দিকে তাকাচ্ছেে


 কি করবেন বুঝতে পারছেন না। কি়ছুক্ষন চিন্তা করে তিনি সাহস যুগিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে বললেন...



চলবে 

 


#তুমি আসবে বলে

সূচনা পর্ব 


#নুসাইবা ইভানা 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তুমি আসবে বলে পার্ট ১৩

আমার তোমার তোমাদের গল্প পার্ট ১

বেপরোয়া প্রেমঘোর পার্ট ২