নীল রক্ত পার্ট ১২-১৩
১২+১৩
#নীল_রক্ত
MD Neel Mahmud
পর্ব-১২
,
আয়নাতে স্পষ্ট রিভার্স এর বিদঘুটে চেহারা টা দেখা যাচ্ছিলো,
কিন্ত এখানে রিভার্স আসলো কি ভাবে,
রিতু চিৎকার দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায় আর বেডরুমে নীল শুয়ে ছিলো,
রিতুর চিৎকার শুনে নীল উঠে দাঁড়ায়,
আর রিতু এসে নীল কে জরিয়ে ধরে,
রিতু নীলের বুকে মুখ লুকিয়ে আছে
এই দিকে নীল বার বার জিজ্ঞেস করছে,
নীল- কি হয়েছে এমন করছো কেনো,
রিতু নীলের বুকে মুখ লুকিয়ে এক হাত দিয়ে দেখিয়ে বলল, ঐখানে সেই কালো লোক টা,
নীল- আরে কোথায়, কি বলো?
রিতু- আমি নিজের চোখে দেখলাম আয়নায়,
নীল- আরে শুনো উঠো আমি বলছি,
নীল রিতুর পিঠে হাত দিতে অনুভব করলো খালি খালি কেনো,
নীল তাকিয়ে দেখে একদম জামা কাপড় ছাড়া,
এখন রিতু কে যতই বলছে আমাকে
ছাড়ো রিতু ততই নীল কে জড়িয়ে ধরছে,
কারণ রিতু পড়ে গেছে এখন লজ্জায়,
রিতুও বুঝতে পেরেছে সে উলঙ্গ,
নীল তখন বিছানায় থাকা কম্বল টা দিয়ে রিতু কে জরিয়ে দেয়,
রিতু লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে,
নীল বলল,,,,
নীল- রিভার্স তোমার আশেপাশে থাকলে তোমার পিঠে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করবে,আর নীল দাগ টা আরো উজ্জ্বল হয়ে যাবে,,,
তুমি আয়নায় যেটা দেখছো সেটা হলো রিভার্স, তোমার পিঠে আয়না ধরলে রিভার্স এর ছবি দেখা যাবে,,,
এই দিকে গ্রিসের অ্যাথেন্স শহরে একটি মেয়ে ইথানের খোঁজ করছে মেয়েটি কে তেমন কেউ চিনে না,
তবে মেয়েটি যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী,
তলোয়ার চালাতে খুব পটু,
আর এই অ্যাথেন্স শহরটা সব কিছু থেকে পিছিয়ে আছে,
পিছিয়ে আছে বলতে আধুনিকতার ছোঁয়া এখনো লাগেনি,
লাগেনি বললে ভুল হবে লাগতে দেয় নি সেখানকার ক্ষমতাশীন রানী এলিজা।
অ্যাথেন্স শহর দেখলে মনে হবে,
সেই প্রচীন জগতে আছে,
শুধু অ্যাথেন্স শহর টাই এরকম আর বাকি গুলো ঠিকি আছে,
শুধু ক্ষমতার বলে দাপিয়ে রেখেছে সেই প্রচীনকাল থেকে,
রানী এলিজার আগে রাজা ছিলেন এডাম, এডাম হচ্ছে এলিজার স্বামী
রাজা এডাম মারা যাওয়ার পর এলিজা রানী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন,কারণ বংশে প্রদীপ নেই,
অ্যাথেন্স শহরের মানুষ যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী, আর কালো যাদুতে ভরা,
এর জন্য গ্রিসের সরকার তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে না।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ কাজে রানী এলিজা হাজির থাকেন,
ইথানের বিশ্বস্ত গুপ্তচর খবর দেয় ইথান কে,যে আপনার শহরে আপনাকে কেউ খোঁজ করছে কিন্ত সে মেয়ে আমি দুঃখীত তার নাম ঠিকানা জানতে পারি নাই কারণ সে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে,
মুখে মুখোশ পড়া যার জন্য আমি চিনতে পারিনি,
যেহেতু অ্যাথেন্স শহরের মানুষ কালো যাদু জানে তাই ইথানের কাছে খবর
পৌছে দিতে দেড়ি হয়নি,
ইথান পড়ে গেলো চিন্তায় তাকে কে খোঁজ করছে তাও আবার একটি মেয়ে,
রিভার্স এর কোন সহযোগী নয়তো,
এই কয়েক বছরে তার কেউ খোঁজ করেনি হঠাৎ তার খোঁজে কে?
বেলকনিতে নীল চিন্তায় ডুবে পায়চারি করছিলো এমন সময় রিতু এসে বলল,
রিতু- কোন কারণে চিন্তিত তুমি?
নীল- না।(মিথ্যা বলল)
রিতু- তাহলে এখানে?আচ্ছা তোমার সাথে দেখা করতে ওসি আকবর এসেছে?
নীল- ওসি আকবর, আমার কাছে কেনো,
রিতু- তোমার কলেজে নাকি খুন হয়েছে তার তদন্ত করতে,
নীল কোন চিন্তা না করে চলল ওসির কাছে কারণ নীলের তো মায়া শক্তি আছে,বশ করে ফেলবে একদম,
নীল গিয়ে সোফায় বসলো,
ওসি- তা নীল সাহেব আপনি ভালো আছেন তো।
নীল- জ্বি ভালো,কি চাই?
ওসি- আসলে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা আছে জানেনি তো আপনার কলেজে খুন হয়েছে,,,
নীল- জানি তো।
ওসি- তো যখন খুন হলো তখন আপনি কোথায় ছিলেন?
নীল- কেনো ক্লাসে?
ওসি- কিন্ত নীল মশাই ক্লাস রেকর্ড বলছে সেদিন আপনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন কিন্ত ক্লাসে ছিলেন না,তার সাক্ষী আমার কাছে আছে,
কিন্ত নীল মায়া করার চেস্টা করছে কিন্ত পারছে না,
নীলের মায়া শক্তি কাজ করছে না,
বার বার চেস্টা করছে কিন্ত কাজ হচ্ছে না,
হয়তো রিতুর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার কুফল ভোগ করতে হচ্ছে,
হয়তো এর জন্য নীল তার মায়া শক্তি হারিয়ে ফেলেছে,
ওসি আকবর ছেলেটা কে আসতে বলে
যে ছেলেটা নীল কে ছাদে যেতে দেখেছে ফারিয়ার সাথে,
আরেকজন কে যে ছাদ থেকে নামতে দেখেছে ফারিয়া ছাদ থেকে পরার পর,
এবার তো মনে হয় নীল খুব ভালো ভাবেই ফেঁসে যাবে,,
কিছুক্ষণ পর ছেলে দুটো আসলো
সব কিছু খুলে বলল,
ওসি আবার নোট করলেন,
নীল কে এরেস্ট করে নিয়ে চলে গেলো,
এই খবর টা আবার ফারিয়ার বাবা পায়।
নিয়ে যাওয়ার আগে রিতু কে বলল,
এবার নীল সাহেবের ফাঁসি নিশ্চিত
কারণ মেয়ের বাবা প্রভাবশালী,
নীল চিন্তায় পড়ে গেলো যদি তার মায়া শক্তি কাজ না করে তাহলে নীল শেষ,
নীলের বিচার কাজ শুরু হয়,
সাক্ষী প্রমাণ, আর ফারিয়ার বাবার ক্ষমতার বলে নীলের ফাঁসির রায় হয়,
like,cmt,share,
(চলবে)
#নীল_রক্ত
MD Neel Mahmud
পর্ব-১৩
,
ফারিয়ার বাবার ক্ষমতার বলে নীলের ফাঁসির রায় হয়,
বিচারক, উকিল, সাক্ষী সবাই কে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে ফারিয়ার বাবা,
নীল যে খুন করেছে এটা চিরন্তন সত্য,
রিতুর টেনশনের শেষ নেই নীল যে এত বড় একটা কাজ করবে তা ভাবতেও পারে নি,
রিতু আছে দৌড়ের উপর কোন ভাবে নীল কে মুক্ত করা যায় কিন্ত,
নীলের যদি কিছু হয় তাহলে তার মেয়ে দুটো শেষ ,,
কিন্ত এই দিকে নীলের মায়া শক্তি কাজ করছে না,
আর নীলের মায়া শক্তি কাজj না করলে নীলের নিশ্চিত মৃত্যু অবধারিত,
নীলের সাথে জেলে দেখা করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে,
ফাঁসির ২০ মিনিট আগে দেখা করতে পারবে,
নীলের গুপ্তচরেরও কোন সারাশব্দ নেই,
নীল বসে আছে জেলের এককোণে অন্ধকারে,
এমন সময় কেউ একজন আসলো তাকে দেখে পুলিশ মনে হচ্ছে না,
অচেনা লোকটি আলোয় মুখ নিয়ে বললেন আমি ফারিয়ার বাবা,
আমি জানতে চাই আমার মেয়ে কে তুই
কেনো মারলি কি অপরাধ করেছিলো আমার মেয়ে,
হাতে একটা লাঠি নিয়ে জেলের ভিতরে ঢুকলো ফারিয়ার বাবা,
নীল চুপ করে বসে আছে,
ফারিয়ার বাবা আবার জিজ্ঞেস করলো
আমার মেয়ে কে কেনো খুন করেছিস।
বলেই ফারিয়ার বাবা লাঠি দিয়ে মারা শুরু করলো,
কিন্ত নীল কোন নাড়াচাড়া করছে না মনে হচ্ছে নীলের শরীর কেউ চুলকে দিচ্ছে এমন,
নীল কে যে মারছে তা মনেই হচ্ছে না,
মায়া শক্তি কি ফিরে পাচ্ছে,,,,না এটা খুনের নেশা নীলের চোখ নীল হয়ে যাচ্ছে মানে খুনের নেশা মাথায় চেপে বসেছে আজ এখন একটা খুন হবে,
জেলে ফারিয়ার বাবা ছাড়া আর কেউ নেই তাকেই খুন হতে হবে,,,
নীলের মাথায় যদি একবার খুনের নেশা
ধরে খুন না করা অবধি তার নেশা কাটবে না,
নীল ঘাড়টা ফারিয়ার বাবার দিকে ঘুরায়,
তখন নীলের চোখ দুটো দিয়ে নীল ঝড়ছিলো মনে হচ্ছে এমন,
অন্ধকারে নীল চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছিলো,
নীল ঘাড় টা ঘুরিয়ে লাফ দিয়ে ফারিয়ার বাবার কুলে উঠে ঘাড়ের উপর দেয় এক কামুড়, লাল টকটকে রক্ত পিক দিয়ে ইনজেকশন এর মতো বের হয়,
নীল জেলের ভিতরেই কামড়ে কামড়ে ফারিয়ার বাবার দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলে,
আর লুটিয়ে পড়ে মাটিতে দেহটি,
ফারিয়ার বাবার মাথা টা দেহ থেকে
একটু দূরে পড়ে আছে আর মুখটা
বার বার হা করেই যাচ্ছে,
রক্তে নীলের ছেল টা একদম ভেসে গেছে,
পাশের সেলের আসামী যখন রক্ত রক্ত বলে চিৎকার দিয়ে উঠে ঠিক তখনি
পাহাড়ায় থাকা পুলিশ গুলো দৌড়ে আসে এসে দেখে ফারিয়ার বাবার
দেহ টা পড়ে আছে মেঝেতে আর তার পাশেই নীল বসে আছে,,
হয়তো জেল প্রহরীরা এত রক্ত কোন দিন দেখি একজন দেখেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,
এই ঘটনা জেলার কে জানানো হয়,
সে এসে দেখে এই এই হয়েছে,
জেলার এসে বললেন লাশ টা গায়েব করে ফেলতে কারণ যদি উপর মহল জানতে পারে যে জেলের ভিতর খুন,
তাও অফিসারের সহায়তায় তাহলে
সবার শাস্তি হবে, জেলার তাই লাশ টা গুম করে ফেলতে বলল,
কিছুক্ষনের মধ্যে লাশ গুম করা হয়ে গেলো,
নীল কে রাখা হল আরো কঠিন সেলে শাস্তি স্বরূপ অন্ধকার সেলে রাখা হয়,
যেখানে নেই বিদ্যুৎ নেই কোন আলো,
একদিন দুদিন করে করে ফাঁসির দিন চলে আসলো,
ফাঁসির ২০মিনিট আগে রিতু আসলো
দেখা করতে কিন্ত নীল দেখা করতে রাজি না,
রিতু আছে দুশ্চিন্তায় কারণ এই দিকে নীলের প্রাণ আর ঐ দিকে নীলের ২ মেয়ে হেলেন আর হেলেনার প্রাণ,
নীল যদি দেওয়ালের কাছে না যায় তাহলে কখনোই গোপন দরজা খোলবে না,
এই দিকে নীলের ফাঁসির ডাক পড়ে গেলো,
নীল শুধু মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,
তাকে বাঁচাতে কেউ আসে কিনা,
কিন্ত কেউ আসলো না,
ফাঁসির দড়ি গলায় পড়ার আগে নীল তার মা কে শরণ করলো,
আরেকটা কথা না বললেই নয়,
নীলের মা হচ্ছে অ্যাথেন্স শহরের রানী এলিজা, নীলের বাবা মরার আগ হতে নীল শহর ছাড়া,
নীল হচ্ছে বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান,
রানী এলিজা ধরেই নিয়েছে তার ছেলে হয়তো বেচে নেই,
নীল যদি বেঁচে থাকে তাহলে নেক্সট রাজা নীল মানে ইথান,
নীল দাঁড়িয়ে মায়ের কথা ভাবতেই এমন সময় লম্বা লম্বা গোঁফ ওয়ালা একজন
লোক আসলো,স্বাস্থ্যবান যে কেউ দেখলে ভয়ে তার আত্মা কেঁপে উঠবে,
সেই লোক টি এসে হাত কড়া সামনে থেকে হাত দুটো পিছনে নিয়ে পুনরায় হাতকড়া লাগিয়ে দিলো,
তারপর কালো কাপড় দিয়ে মুখ ডেকে দিলো,
নীলের মন এইবার বলতে লাগলো তাকে বাঁচাতে আর কেউ আসবে না,
তার প্রাণ পাখি একটু পর উড়াল দিবে,
তারপর ফাঁসির দড়িটা গলায় পড়িয়ে দিলো,
তারপর জল্লাদ সময়ের অপেক্ষা করছে।এক হাতে রুমাল অন্য হাতে ঘড়ি তাকিয়ে আছে,
হাত থেকে রুমাল পড়তেই দড়ি টানবে জল্লাদ,।
রুমাল হাত থেকে পড়ে গেলো আর জল্লাদ দড়ি টানলো,,,
নীলের খেল খতম,,,,,
বিঃদ্রঃ ভালো রেসপন্স পেলে প্রতিদিন দেওয়ার চেষ্টা করবো,
(চলবে)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন